ভয় করছে মা, রুশ সেনার শেষ বার্তা শুনল রাষ্ট্রপুঞ্জ !
ভুবন মোহনকর : ০২/০৩/২০২২ : টেক্সট মেসেজে মার সঙ্গে কথা বলেছিলেন এক রুশ সেনা। তাঁদের কথোপকথন থেকে স্পষ্ট, মা আদৌ জানতেন না যে ছেলেকে যুদ্ধে পাঠানো হয়েছে। তিনি বরং জানতেন, ট্রেনিংয়ে গিয়েছে ছেলে। প্রসঙ্গত, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর পর সরব হয়েছেন রাশিয়ার বহু সেনার মায়েরা।
তাঁদের দাবি, সামরিক মহড়ার জন্য ইউক্রেন সীমান্তে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে পৌঁছনোর পর সরাসরি যুদ্ধের ময়দানে ঠেলে দেওয়া হয়েছে তাদের। ইউক্রেনের পরিস্থিতি কেমন, সে সম্পর্কে যে কোনও ধারণাই ছিল না তাঁদের, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন ওই সেনা।
দেখতে দেখতে ছ-দিনে পা রাখল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। বিদেশি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। এমনকি অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন সাধারণ নাগরিকেরাও। কিন্তু যারা আক্রমণকারী, সেই রুশ সেনাবাহিনীর মনোভাব ঠিক কেমন? আক্রান্ত দেশের মানুষদের কাছে তাঁরা ভিলেন হয়ে দাঁড়িয়েছেন বটে। কিন্তু তাঁরাও কি সবাই যুদ্ধের পক্ষে? এই সেনার কথায় এবার সেই প্রশ্নেরই উত্তর পাওয়া গেল।
মাকে নিজের আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন এই সেনা। বলতে দ্বিধা করেননি যে ভয় করছে তাঁর। যে কাউকে, এমনকি নিরীহ নাগরিকদের আঘাত করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের বলা হয়েছিল, ইউক্রেনের মানুষ স্বাগত জানাবেন তাঁদের। কিন্তু বাস্তবের ছবিটা ঠিক বিপরীত। চিঠিতে রুশ সেনার মা জানতে চান, ছেলের ঠিকানা এখন কী, তার কাছে পার্সেল পাঠানো যাবে? উত্তরে ছেলেটি লেখে, “ইউক্রেনে আছি। গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলতে ইচ্ছে করছে” ।
সোমবার ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে ডাকা একটি বিশেষ অধিবেশন ডেকেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। সেখানে ইউক্রেনের পরিস্থিতি বোঝাতে যুদ্ধে নিহত এক রুশ সেনার এই শেষ বার্তা পাঠ করে শোনালেন ইউক্রেন রাষ্ট্রদূত। বোঝাতে চাইলেন, কী ভাবে সাধারণ নাগরিককেও রাশিয়ার হামলার বলি হতে হচ্ছে। তার পর বললেন, ‘‘আপনারা এই বার্তালাপের নিরিখে যুদ্ধের তীব্রতা অনুধাবন করার চেষ্টা করুন। ভেবে দেখুন, এই অধিবেশনে উপস্থিত প্রতিটি দেশের নেমপ্লেটের পাশে দাঁড়িয়ে আছে এমন ৩০ নিহত রুশ সেনার আত্মা”।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কি ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহার করেছে রাশিয়া। ভ্লাদিমির পুতিন সরকারের বিরুদ্ধে সোমবার এই অভিযোগ করেছে ইউক্রেন-সহ বিশ্বের একাধিক মানবাধিকার সংগঠন। যদিও এ বিষয়ে সরকারি ভাবে মুখ খোলেনি মস্কো।
মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দাবি, ভ্যাকুয়াম বোমার পাশাপাশি ক্লাস্টার বোমার মতো নিষিদ্ধ অস্ত্রও হয়তো প্রয়োগ করেছে রাশিয়া। তাদের আরও দাবি, রাশিয়ার হামলার লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ।