পুজোয় কর্তব্যরত সকল পুলিশ আধিকারিকদের সাথে রেনকোর্ট রাখার পরামর্শ দিলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল
পুজোর ডিউটিতে সব পুলিশকর্মী ও আধিকারিকের হাতে থাকতে হবে বর্ষাতি। মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের পদস্থ কর্তা ও আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে এই নির্দেশ দিলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। এখন থেকেই শহরের আকাশে কালো মেঘের ভ্রূকুটি। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এবার পুজোয় ভাসতে পারে কলকাতা। ফলে বৃষ্টির মধ্যেই ডিউটি করতে হবে পুলিশকে। জলে ভিজে যাতে তাঁদের শরীর খারাপ না হয়, তার জন্যই পুলিশ কমিশনারের নির্দেশ, ডিউটির শুরু থেকেই প্রত্যেক পুলিশকর্মী ও আধিকারিকের সঙ্গে থাকবে রেনকোট।
বৃষ্টি হলে রেনকোট পরেই ডিউটি করতে হবে তাঁদের। প্রত্যেকে যেন নিজের শরীরের প্রতি যত্ন নেন, সেই পরামর্শই লালবাজারের।আগামী বৃহস্পতিবার চতুর্থী থেকেই পুরোদমে রাস্তায় নামছে কলকাতা পুলিশ। দুপুর থেকে দু’দফায় ডিউটি করবেন পুলিশকর্মীরা। প্রথম দফায় দুপুর থেকে রাত বারোটা ও পরের দফায় সন্ধে থেকে ভোররাত পর্যন্ত চলবে ডিউটি। যেহেতু কিছু সংখ্যক দর্শনার্থী সকালেই প্যান্ডেল হপিং করেন ও বহু মণ্ডপে সকালে পুষ্পাঞ্জলির ভিড় থাকে, তাই পুজোর ক’দিন সকালেও মণ্ডপ ও রাস্তায় থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ।
বৈঠকে পুলিশ কমিশনার জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এই বছর পুজোয় দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে পারে। তাই সেভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। বিশেষ করে বেপরোয়া তথা হেলমেটবিহীন বাইক আরোহী, বাইকে ট্রিপল রাইডিং দেখতে পেলেই কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। পুজোয় পিকেটিংয়ের সঙ্গে রাস্তায় গাড়ি, বাইক ও হেঁটে বা ই-সাইকেলে করেও লাগাতার টহল দিতে হবে শহরজুড়ে। লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ ও গোয়েন্দা দপ্তরকেও বিশেষ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
লালবাজার জানিয়েছে, এই বছর পুজোয় অতিরিক্ত পাঁচ হাজার পুলিশবাহিনী সহ ডিভিশন ও ট্রাফিক নিয়ে রাস্তায় নামছে দশ হাজার পুলিশ। এ ছাড়াও এবার রাস্তায় থাকছে অতিরিক্ত দশ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। বড় পুজো মণ্ডপগুলির দায়িত্বে থাকছেন ডিসি ও এসি পদমর্যাদার পুলিশকর্তারা। কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ও মণ্ডপের কাছাকাছি থাকছে চারশোটি পুলিশ পিকেট। রাস্তায় টহল দেবে ৫৮টি পিসিআর ভ্যান, ১৩টি কুইক রেসপন্স টিম, হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড। প্রায় একশোটি অতিরিক্ত সিসিটিভি বসানো হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়।
৬৭টি পুজোমণ্ডপের আশপাশে থাকছে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। ২৭টি মেট্রো স্টেশন, কালীঘাট মন্দির, বিড়লা মন্দির সহ কলকাতার দ্রষ্টব্য স্থানগুলিতে থাকবে বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থা। তৈরি থাকছে ১৪টি ট্রমা কেয়ার সহ পুলিশের ২৮টি অ্যাম্বুল্যান্স।
শিশু বা প্রবীণরা ভিড়ে হারিয়ে গেলে তাঁদের উদ্ধারের জন্য থাকছে গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ গাড়ি। কলকাতার ট্রাফিক যাতে পুজোয় সচল থাকে, তার জন্য ট্রাফিকের পরিকল্পনা রয়েছেই। চতুর্থী থেকে বিসর্জনের শেষ দিন পর্যন্ত কয়েকটি জায়গায় অতিরিক্ত কন্ট্রোল রুম থাকছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।