কিয়েভ থেকে দ্রুত পালান! অবিলম্বে কিয়েভ ছাড়ার নির্দেশ, রুশ ইউক্রেন বৈঠক নিস্ফলা! কেড়ে নেওয়া হল পুতিনের ব্লক বেল্ট
ভুবন মোহনকর: ০২/০৩/২০২২ ; ইউক্রেনে ভয়াবহ আক্রমণ চালাচ্ছে রাশিয়া। ফলে দেশটির বিভিন্ন শহরে আটকে পড়েছেন বহু ভারতীয় নাগরিক। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার কাজ। এহেন পরিস্থিতিতে নাগরিকদের উদ্দেশে মঙ্গলবার নতুন নির্দেশিকা জারি করল ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাস। সেই নির্দেশিকায় বলা হচ্ছে, “ আজকেই কিয়েভ ছাড়ুন। ট্রেন ধরে হোক বা অন্য যে কোনও যানবাহনের ব্যবস্থা করে বেরিয়ে আসুন ইউক্রেন ছেড়ে।”
আরও জানানো হয়েছে, “যে ট্রেন পাওয়া যাচ্ছে তাতেই উঠে পড়ুন। ট্রেন না পেলেও অন্যভাবে বেরিয়ে আসুন।” এর আগে ভারতীয় দূতাবাস থেকে বলা হয়েছিল কিয়েভের রেল স্টেশনে আশ্রয় নেওয়ার জন্য। কিয়েভ থেকেই ইউক্রেনের পশ্চিম সীমান্তবর্তী দেশগুলিতে ভারতীয়দের পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে ইউক্রেনের তরফ থেকে।
প্রসঙ্গত, শান্তি বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির প্রতিনিধিরা দাবি করেছেন, অবিলম্বে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করতে হবে। ইউক্রেন থেকে সম্পূর্ণ ভাবে সরিয়ে নিতে হবে রুশ সেনাবাহিনীকে। শুধু তা-ই নয়, ক্রাইমিয়া ও ডনবাস এলাকাকেও রুশ সেনা-মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। বৈঠক শুরুর আগে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছিলেন, ‘‘কথা হোক আগে। সমঝোতায় পৌঁছতে আমরা কী ভাবছি, সে নিয়ে এখনই কিছু বলব না।’’ বৈঠক শেষেও রাশিয়া কী চায়, সে নিয়ে বাইরে টুঁ শব্দটি করেনি ক্রেমলিন। দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠকের আগে মস্কোয় ফিরে গিয়েছে রুশ প্রতিনিধিদল। ইউক্রেনীয়রাও কিভে ফিরেছেন। শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার পরে তাঁরা ফের বেলারুস সীমান্তের বৈঠক-স্থলে ফিরবেন।
এই পরিস্থিতিতে শোনা যাচ্ছে, মস্কোও চায় সমঝোতায় পৌঁছতে। এ যুদ্ধে তাদেরও কম ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ইউক্রেনের দাবি, তাদের প্রতিঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন চার হাজারের বেশি রুশ সেনা। যুদ্ধে ব্যয় হয়েছে কোটি কোটি ডলার। ইউক্রেনের দাবি অনুযায়ী, রাশিয়ার প্রায় ১৪৬টি ট্যাঙ্ক, ২৭টি যুদ্ধবিমান, ২৬টি হেলিকপ্টার ধ্বংস করেছে তারা। কিন্তু প্রবল আগ্রাসনেও গত চার দিনে ইউক্রেনের কোনও গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করতে পারেনি রাশিয়া। তারা শুধু দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের দু’টো ছোট শহর কব্জা করেছে। বাকি সর্বত্র প্রবল বাধার মুখে পড়েছে রুশরা। আজ আবারও বৈঠকের বসতে চলেছে দুই দেশ, তাই ধরে নেওয়া যায় গত কালকের বৈঠক নিস্ফলা।
উল্লেখ্য, বিশ্ব ক্রীড়ামঞ্চে ক্রমশ একঘরে হচ্ছে রাশিয়া। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য রাশিয়াকে একঘরে করে দিয়েছে ফিফা এবং উয়েফা। এর ফলে এই বছর কাতার বিশ্বকাপে খেলা হবে না রাশিয়ার। খেলা হবে না ইউরোপীয় ফুটবলেও। রাশিয়ার ক্লাবগুলোও নামতে পারবে না মাঠে। শুধু ফিফাই নয়, আন্তর্জাতিক অলিম্পিক সংস্থা, জুডো ফেডারেশনও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুতিনের দেশের উপরে। এবার বিশ্ব তায়কোন্ডো সংস্থা কেড়ে নিল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দেওয়া সম্মানিক ব্ল্যাক বেল্ট। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আরো বেসামাল হয়ে উঠছে।