টলিউডবিনোদনসেলিব্রিটি

শনিবারের বিনোদন: অপরাজিত’র হাত ধরে পথের পাঁচালী’র স্মৃতি, আবেগ, রাজনীতি

শনিবারের বিনোদন: অপরাজিত’র হাত ধরে পথের পাঁচালী’র স্মৃতি, আবেগ, রাজনীতি

 ভুবন মোহনকর: ২৮/০৫/২০২২: অনীক দত্তের ছবি ‘অপরাজিত‘ ( Aparajito ) দেখে উচ্ছ্বসিত দর্শক। ছবি মুক্তির পর থেকে বাড়ছে শো, হলে ভিড় জমাচ্ছেন সিনেমাপ্রেমীরা। আগেই ভারত জুড়ে চারটি রাজ্যে মুক্তি পেয়েছিল ছবি। প্রথমে ২৬ টি হল পেয়েছিল এই ছবি, মাত্র ৪২ টি শো ছিল।

মুক্তির পরের দিন থেকে বিভিন্ন হলে এই ছবির শো বাড়ে। বর্ষীয়ান পরিচালকের লড়াইয়ের গল্প, অন্যদিকে জিতু কমলের অভিনয় মন ছুঁয়ে গিয়েছে দর্শকের। লুক একেবারে হুবহু মিলে যাওয়ায় আরও বেশি জীবন্ত লেগেছে চরিত্রটি। তাঁর লুক পর্দায় ম্যাজিক সৃষ্টি করেছে। ‘কনটেন্ট ইজ কিং’, কনটেন্টের জন্যই শিল্পী, কনটেন্ট ভাল না হলে জনপ্রিয় শিল্পী হলেও ছবি চলে না, তা প্রমাণ করল ‘অপরাজিত‘ ।

ছবিতে কিন্তু কোন সুপারস্টার নেই। আছে বলতে অভিনয়, অকাল্ন্ত পরিশ্রম আর ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা জিতু কমল। তবে শোনা যায়,জিতু কিন্তু অপরাজিত হয়ে উঠতে পারতেন না যদি না আবির চট্টোপাধ্যায় এই ছবির অফার ফিরিয়ে দিতেন। প্রথম থেকেই পরিচালকের পছন্দ ছিল অভিনেতা আবির চট্টোপাধ্যায়কে। কিন্তু হঠাত্‍ কেড়েই লকডাউনের পর তারিখ নিয়ে সমস্যা হওয়া সেই ছবি থেকে সরে আসনে অভিনেতা।

 

এক সাক্ষাৎকারে জিতু প্রসঙ্গে পরিচালক বলেন যে “তিনি আগে অভিনেতা জিতু কে চিনতেন না। সত্যজিতের চেহারার সঙ্গে মিল আছে এমন কাউকে সত্যিই খুঁজে পাওয়া কঠিন বলে চরিত্রের নাম বদলেছিলেন পরিচালক। কিন্তু জিতুকে চেনার পর তার সঙ্গে কাজ করার পর মুগ্ধ হয়েছেন তিনি। অনীক বলেন, সেই সময় হয়তো কেউ ভর করেছিলেন, খুব দ্রুত সব কাজ শিখে নিয়েছিলেন তিনি। এই ছবি করতে অনেক বাধা হলেও সেগুলো সমস্ত কেটে গিয়েছে বলে জানান পরিচালক। ‘অপরাজিত’ (Aparajitofilm) সত্যজিতের নন্দনে প্রদর্শিত হয়নি তা সত্যি বাঙালির দুর্ভাগ্য। কিন্তু সেই তরজায় মেতে থাকল বাঙালি আর চলল রাজনৈতিক বিতর্ক। কিন্তু তারই পাশে এ শহরেই ‘বসুশ্রী’ হলে সৃষ্টি হল এমন একটি বিরল ঐতিহাসিক ঘটনা। স্রষ্টা ও তাঁর সৃষ্টি নিয়ে দু যুগের ছবি একই পর্দায় প্রদর্শিত হচ্ছে।

সেই কাশবনের ভিতর দিয়ে অপু-দুর্গার রেলগাড়ি দেখতে ছুটে যাওয়া দু যুগের ছবিতেই দু প্রজন্ম দেখল বসুশ্রী সিনেমাহলে বসে। অনীক দত্ত আর জিতু কমলের ‘অপরাজিত’ যেন এই ঐতিহাসিক ঘটনার সেতুবন্ধন করল। কম দামের টিকিটের সস্তায় পুষ্টিকর খাবার খেতেই বহু মানুষ ‘অপরাজিত‘ দেখছে বসুশ্রীতেই। উপরি পাওনা বসুশ্রীর দেওয়ালে,সাহেবিকেতার সিড়িতে, হলের চেয়ারে পুরনো নস্ট্যালজিয়া খুঁজে পাওয়া। যেখানেই ‘পথের পাঁচালী’ চলেছিল, যেখানে সত্যজিত্‍ রায়ের পায়ের ধুলো পড়েছিল সেখানে ‘অপরাজিত‘ দেখা মানে তো পুণ্যভূমিতে বসে ছবি দেখা। যেটা দিতে কখনই মাল্টিপ্লেক্স পারে না। পথের পাঁচালীর সেই স্মৃতি উস্কে দিয়ে আবারও মন যায় করে নিল *অপরাজিত*। যা আজ সারা দেশে গর্বের সঙ্গে প্রকাশিত, যা বাঙালির সেন্টিমেন্ট।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page

Adblock Detected

Please Turn Off Your Ad Blocker.