খবরজেলার খবর

রসিকগঞ্জ গ্রামে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি মহিলাদের উদ্যোগে বিশাল অনুষ্ঠান

রসিকগঞ্জ গ্রামে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি মহিলাদের উদ্যোগে বিশাল অনুষ্ঠান

শ্যামাপদ প্রামাণিক: একজোট হলে যে কোন বড় ধরনের যে অনুষ্ঠান করা যায়। তা প্রমাণ করলো দাসপুর থানার রসিকগঞ্জ গ্রামের বেশ কয়েকজন মহিলা। তারা সবাই জোটবদ্ধ হয়ে অষ্টমপ্রহরের মতো বিশাল এক নাম যজ্ঞের দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠান করল। মহিলারা প্রধান উদ্যোক্তা হলোও পুরুষরা সক্রিয় সহযোগিতায় ছিলেন। শুধুমাত্র রসিকগঞ্জ গ্রামে কেন ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন গ্রামে এবং বিভিন্ন পারিবারিক উদ্যোগে। নববর্ষের প্রথম দিন থেকেই হরিনাম সংকীর্তন এর অনুষ্ঠান প্রায় প্রতি মাসেই হয়। বিভিন্ন হরিনাম সংস্কৃতিচর্চার মানুষের উদ্যোগে ও সহযোগিতায়। সূত্রের খবর এই মহকুমায় বহু হরিনামপ্রেমী ভক্তবৃন্দ আছেন। আছে প্রায় প্রতি গ্রামে হরিনাম সংকীর্তন চর্চার দল।

মহকুমার জুড়ে বিভিন্ন পারিবারিক হরিমন্দির ও বৈষ্ণবদের অস্থল আছে। এই অস্থলগুলীতে নিত্য শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য মহাপ্রভু ,নিত্যানন্দ অদ্বৈত, শ্রীবাসের হরিদাসের পুজো হয়। ভাগবত পাঠ ও হরিনাম সংকীর্তন হয়।

রসিকগঞ্জ গ্রাম সংস্কৃতি সমৃদ্ধ একটি বিশিষ্ট গ্রাম। এই গ্রামে সারা বর্ষ ব্যাপী নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুজো হয়। শিব, শীতলা, ধর্ম,রামকৃষ্ণ , দুর্গা, কালী, সরস্বতী এবং লৌকিক দেবতা ভীম। এই সব অনুষ্ঠানের পাশাপাশি দোল পূর্ণিমায় হরিনাম সংকীর্তন সহযোগে দুদিন ব্যাপী শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর পুজোও হয়। রসিকগঞ্জ স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কালী, দুর্গা ও সরস্বতী পুজোয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মূলত এই অনুষ্ঠানগুলিতে পুরুষদের প্রাধান্য থাকে। কিন্তু মহিলারাও যে উদ্যোগ নিয়ে কিছু অনুষ্ঠান করতে পারে। তারই প্রমাণ এই গ্রামের পূর্ব পল্লীর বিশেষত বাড়ীর গৃহবধূদের (মহিলাদের) উদ্যোগে মহাসমারোহে অষ্টপ্রহরব্যাপী হরিনাম সংকীর্তন অনুষ্ঠান। এই পল্লীর কয়েক জন মহিলারা এই যজ্ঞের অনুষ্ঠান কে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে মরিয়া ছিল। অনেকেই তাদের এই নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান করার উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন অষ্টপ্রহর বিশাল খরচের অনুষ্ঠান তাই এই রকম অনুষ্ঠানকে যেভাবে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করল ভাবতে অবাক লাগে।

তাছাড়া মহিলারা ক্রীড়া থেকে শিক্ষা, শিল্পে ইত্যাদিতে নানাভাবে বিশেষ দৃষ্টান্ত রাখছে।

কেউ কেউ আবার বলেছেন, সময়ের পরিবর্তনে দেশের নানা কাজে নারীরা এগিয়ে আসছে। এই কর্মকাণ্ড কে তারা নারী প্রগতির দৃষ্টান্ত বলে বিশ্লেষণ করেন। পুরাণ থেকে জানা যায়, প্রাচীনকালে মহিলাদের দ্বারা অনেক কঠিন কাজ হয়েছে। যখন দেবতারা অসুরদের শেষ করতে পারছেনা। তখন মহিলা দেবী এগিয়ে এসে অসুর নিধন করেছো। আজ যা ইতিহাস। তার প্রমাণ ও আছে মহিষাসুর কে বধ করেছিল একজন মহিলা। যাকে আমরা আশ্বিন মাসে দুর্গারূপে ঘটা করে পুজো করি। ওই পল্লীর দেবব্রত বারিক ,মাধব সাউ ও বিষ্ণুপদ বারিক বলেন, আমাদের এই পল্লীর কয়েকজন মহিলারাই ছিল দুদিনের অষ্টপ্রহর ব্যপী হরিনাম

প্রধান উদ্যোক্তা। হরিনাম সংকীর্তনের অনুষ্ঠান কে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে। আমরা নানা ভাবে সহযোগিতা করেছি। দুদিনে বিভিন্ন গ্রামের প্রায় তিন হাজার মানুষকে আমরা অন্নভোগ বিতরণ করেছি। আমাদের গ্রামের ও অন্য গ্রামের মানুষ এই হরিনাম সংকীর্তন অনুষ্ঠানে বিশাল আনন্দে মেতে উঠেছিল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page

Adblock Detected

Please Turn Off Your Ad Blocker.