ট্যুর ট্রিপ : গন্তব্য যখন নাড়াজোল রাজবাড়ী
ভুবন মোহনকর( রবিবার স্পেশাল) ২৭/০২/২০২২! বাংলার ইতিহাসে বিশেষভাবে পরিচিত বহু রাজবাড়ির সন্ধান পাওয়া যায় । তাদেরই মধ্যে অন্যতম হলো নাড়াজল রাজবাড়ি।
প্রায় ১৫ শতকে রাজা উদয় নারায়ণ ঘোষ এই নাড়াজল রাজবাড়ির প্রতিষ্ঠা করেন । এই উদয় নারায়ণ ঘোষ ছিলেন,বর্ধমানের রাজা ঈশ্বর ঘোষের উত্তরাধিকার । শোনা যায় একদা রাজা উদয় নারায়ণ শিকারের জন্য নাড়াজলে আসেন । সেই সময় তিনি জঙ্গলের মধ্যে পথ হারিয়ে এক অলৌকিক ঘটনার সম্মুখীন হন । তিনি দেখেন মায়াবী আলোয় পরিপূর্ণ একটি স্থানে একটি বকপাখি এক বাজ পাখিকে আক্রমণ করছে । ঘটনাচক্রে সেই দিন রাতেই রাজা উদয় নারায়ণ দেবী দুর্গার স্বপ্নাদেশ পান ।
এই ঘটনার পরই তিনি সেই স্থান থেকে প্রচুর ধনসম্পত্তি এবং একটি দূর্গামূর্তি লাভ করেন। পরবর্তী কালে এই ধনসম্পত্তির সাহায্যেই উদয় নারায়ণ এই রাজবাড়ি নির্মাণ করেন। নাড়াজলে রাজবাড়ি প্রায় ৩৬০ বিঘা জমির উপর অবস্থিত । এই রাজবাড়ির আনাচে কানাচে লুকিয়ে ইতিহাসের গন্ধ । এমনকি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় এই রাজবাড়ির সদস্যরা প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন । আর তাই মহাত্মা গান্ধী, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো ব্যক্তিত্বরা এই রাজবাড়িতে এসেছিলেন ।
বর্তমানে এই রাজবাড়ি যত্নের অভাবে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। চলুন সংক্ষেপ জেনে নেওয়া যাক এই রাজবাড়ীর কিছু কথা। 📍এই রাজবাড়িতে মোট ২৫০ টি কক্ষ রয়েছে । 📍রাজবাড়ির অন্দরে রয়েছে নাটমন্দির এবং দূর্গামন্দির । প্রায় ২৭ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন এই দূর্গামন্দিরটি সেই সময় পঞ্চরত্ন মন্দির হিসেবে পরিচিত ছিল ।📍রাজবাড়ির সিংহদ্বারের বাম দিকে রয়েছে গোবিন্দ জিউ মন্দির, সীতারাম জিউ মন্দির এবং একটি প্রসস্থ ঠাকুর দালান । এছাড়াও, রয়েছে হাওয়া মহল, লঙ্কাগড় জলহরিত ইত্যাদি।
কিভাবে যাবেন?
ট্রেনে – হাওড়া থেকে লোকাল ট্রেন ধরে পৌঁছে যান পাশকুড়া স্টেশন ।স্টেশন থেকে টোটো নিয়ে সম্পূর্ণ নাড়াজলে দর্শন করে নিতে পারেন ।
সড়কপথে – কলকাতা থেকে গাড়ি নিয়ে ১১৫ কিমি পথ অতিক্রম করে পৌঁছে যেতে পারেন নাড়াজলে। তাহলে চলুন ঘুরে আসি পশ্চিম মেদিনীপুর এর নাড়াজল রাজবাড়ি।